
স্টাফ রিপোর্টার: ট্রাকভর্তি ফেন্সিডিল চালানের হোতা সাতক্ষীরার শীর্ষস্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী সিরাজুল প্রশাসনের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।বড় মাদক ব্যবসায়ী হয়েও পুলিশের সামনে দিনরাত সাতক্ষীরা শহর দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । কৌশলে চালিয়ে যাচ্ছে মাদক ব্যবসা। বড় বড় মাদকের চালান সাতক্ষীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে তার তত্ত্বাবধানে চলে যায় রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে। কখনো বাড়ির আসবাবপত্র কখনোবা ট্রাকে পণ্য পরিবহনের নামে কখনো এম্বুলেন্সের মাধ্যমে মাদকের চালান পাঠানো হয়। স্থানীয় মাদকের চালানগুলো ইটভাটার ট্রাকে করে মাছের পেটির ভিতর করে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর এবং দেবহাটা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থানান্তরিত হয়ে শহরে চলে আসে। কিন্তু বারবার কৌশল পরিবর্তন করার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাকে পাকড়াও করতে পারে না।
মাদক ব্যবসায়ী মোঃ সিরাজুল ইসলাম রাজু। সে সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার পাতড়াখোলা গ্রামের শেখ মমিনের ছেলে। বর্তমান সাতক্ষীরা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পলাশপোল শ্বশুরালয়ে বসবাস করছে।যার পুরাতন পৌর ভোটার আইডি নাম্বার ৮৭০৪৪৫০০০০৩৪।অথচ মামলার ক্ষেত্রে বর্তমান ঠিকানা গোপন রেখে পূর্বের শ্যামনগর ঠিকানা ব্যবহার করে বহুবার পুলিশের গোলকধাঁধায় ফেলেছে। রয়েছে পলাতক আসামি হিসেবে।জেলার শীর্ষ একজন মাদক ব্যবসায়ী হয়েও ঠিকানা পরিবর্তনের কৌশল ও তার আত্মপরিচয় গোপন রেখে ব্যবসায়ীর রূপ পরিবর্তন করে নির্বিঘ্নে তার অবৈধ মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
উত্তর পলাশপোলে রয়েছে নির্মাণাধীন তিনতলা বাড়ি। সেখান থেকে তার মাদক ব্যবসার সকল কার্যক্রম পরিচালিত হয।এহেন কর্মকান্ডে বন্ধের জন্য ওই মহল্লার বাসিন্দারা গণ স্বাক্ষরিত একটি চিঠি ইতিমধ্যে পুলিশের বরাবর প্রেরণ করেছে।
সিরাজুল ইসলাম রাজু জেল পুলিশে চাকরি করতো। সেখানে বন্দীদের মাদক সরবরাহের অপরাধে ২০০৫ সালে চাকরীচ্যুত হয়। তার বিরুদ্ধে ২০১৫ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মাদকের মামলা হয়। সেখানে ৫ বছর জেল হয় তার। বছর ঘুরতেই জামিনে বের হয়ে আসে সে।যার এফ আই আর নাম্বার ২২।জি আর নাম্বার ৩১৭। ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রাজবাড়ী সদর থানায় পুলিশ ফেনসিডিলসহ পিকআপ খুলনা মেট্রো ন-১১-০৯৮৫ আটক করে। যাতে ৮১ বোতল ফেন্সিডিল পায়। মাদক ব্যবসায় সংশ্লিষ্টতা পেয়ে ওই মামলায় সিরাজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে মামলা করা হয়েছিল। যার মামলা নম্বর ১০৯।
ওই মামলায় অভিযুক্ত আরেক আসামী সাতক্ষীরা সদরে পরানদাহ গ্রামের চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজ কারিগর ছিলেন। যিনি ২০১৮ সালের ৬ ই আগস্ট কালিগঞ্জ ব্রিজের পাশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়।
শুধু তাই নয় ২০১৯ সালের ১৯ শে নভেম্বর নিজের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী দুই সন্তানের জননী শালমিন আক্তার রুমির লাশ উদ্ধার করা হয়। যে মৃত্যু ছিল সন্দেহজনক। পরিবার সূত্রে জানা যায়, সিরারাজুল এর সাথে তার স্ত্রী শালমিন আক্তার রুমির মাদক ও পরকীয়ার বিষয় নিয়ে প্রায়শই ঝগড়া হতো এবং শারীরিক নির্যাতন করতো।
সিরাজুলের মাদক বেচাকেনার ভয়ঙ্কর একটি গ্যাং রয়েছে। যারা শুধু কেনাবেচা করে না, তার বিরুদ্ধে যারা প্রতিবাদী হয় তাদেরকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়। হত্যার হুমকি দেযওয়া হয়।আতঙ্কিত হয়ে এলাকার অনেকেই তার বিরুদ্ধে সহজে মুখ খুলতে চায় না।
মুঠোফোনে সিরাজুল ইসলাম রাজুর কাছে তার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি কোন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত না। আমাকে বিভিন্ন মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
সিরাাজুল শুধু মাদকসম্রাট নয় সন্ত্রাসী ও বটে। তার ওই কর্মকাণ্ড এলাকার যুবসমাজ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কলঙ্কিত করছে সুস্থ সমাজ কে। যুবকদের ব্যবহার করে উগ্র করে তুলছে। যা আগামীর জন্য ভয়ঙ্কর। এলাকাবাসী তার অসামাজিক এই কর্মকান্ডের ঘৃণিত প্রতিবাদ জানায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তার যথোপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।